আবার শুভেন্দুর সভায় বিজেপি সমর্থকের মৃত্যু, তীব্র ক্ষোভ দলের অন্দরে
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির হয়ে জোর কদমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু এবার তাঁর আচরণে দলের অন্দরেই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল। শুধু তাই নয়, তাঁকে এদিন ট্যুইট বাণে বিদ্ধ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমার গাইঘাটা ব্লকের শুটিয়ে এলাকার পাঁচপোঁতা হাইস্কুল মাঠে ছিল বিজেপির নির্বাচনী সভা। সেখানে যান শুভেন্দুও। সেই সভাতেই এক প্রবীণ বিজেপি সমর্থকের মৃত্যুতে দলের অন্দরেই তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ঘটনার পরে বিরোধী দলনেতার ভূমিকায়। সেই ঘটনাকেই হাতিয়ার করে এদিন ট্যুইটে শুভেন্দুকে আক্রমণ শানিয়েছেন কুণাল।
বিজেপির ওই সভায় এক প্রবীণ বিজেপি সমর্থকের অসুস্থ হয়ে পড়া ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। হারাধন বিশ্বাস নামে বছর আটষট্টির ওই ব্যক্তি সভা চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিজেপির কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে গাইঘাটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, প্রবল গরম আর তৃষ্ণায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি বিজেপির কর্মীরা শুভেন্দুকে জানিয়েছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। এমনকি তাঁকে হাসপাতালে যেতে বা মৃত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতেও অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, তিনি সে সব কিছু না করেই গাড়ি চেপে সভাস্থল ছেড়ে বেড়িয়ে যান। আর এতেই চূড়ান্ত ভাবে ক্ষুব্ধ হন বিজেপির কর্মী ও সমর্থকেরা।
সেই ঘটনাকেই এদিন হাতিয়ার করেন কুণাল। তিনি এই ঘটনাকে বিরোধী দলনেতার ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতা’ এবং ‘অপরাধমূলক মানসিকতা’ হিসাবে তুলে ধরে ট্যুইট করেন। এর সঙ্গে তিনি তুলনায় করেছেন গত বছরের ডিসেম্বরে আসানসোলে কম্বল বিতরণী অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনার। সেখানে কম্বল বিতরণ করছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নিজের ট্যুইটে কুণাল বলেন, এই ঘটনা একেবারেই শুভেন্দু অধিকারীর উদাসীনতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। তিনি আগেই জানতেন যে প্রবল গরম আর তৃষ্ণায় ওই বৃদ্ধ মানুষটি অসুস্থ বোধ করছেন এবং সভার ভিড় থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেননি। এরপর অসুস্থ অবস্থাতেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা বিরোধী দলনেতাকে হাসপাতালে যাওয়ার দাবি তোলেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী তাতে কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ। তিনি হাসপাতালে কিংবা মৃত কর্মীর বাড়িতে না গিয়ে সোজা সভাস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাতেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। কেন বিরোধী দলনেতা একবার আসতে পারলেন না হাসপাতালে? এই প্রশ্ন করতে থাকেন তাঁরা। মৃতের পরিবারও শুভেন্দু অধিকারীর এই ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।।